তৃণমূলের কর্মসমিতির বৈঠকে কী হল?

Reporter name :

Reporter Image :

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Telegram

তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে সোমবার দলীয় শৃঙ্খলার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হল। চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৈরি হল তিন স্তরের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। একটি লোকসভা এবং রাজ্যসভা ভিত্তিক। দ্বিতীয়টি বিধানসভাভিত্তিক এবং তৃতীয় কমিটি দলভিত্তিক। সেই তিন স্তরীয় কমিটির সদস্যদের নামও এদিন ঘোষণা করা হয়। কমিটির নামের তালিকা দেখে বোঝা যাচ্ছে, প্রবীণদের যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নবীনদেরও রাখা হয়েছে কমিটিতে।

রাজনৈতিক মহলে চর্চা ছিল, এদিনের বৈঠকে দলের সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে কথা হবে। এমনকী কিছু ক্ষেত্রে রদবদলও হতে পারে। কিন্তু সেই রদবদল নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি বলে সাংবাদিক বৈঠকে জানান মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে দলের বক্তব্য জানানোর জন্য নেতাদের নাম জানানো হয় এদিন। কারা জাতীয় স্তরে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলবেন, কারা রাজ্য স্তরের নানা বিষয়ে কথা বলবেন, বিধানসভা নিয়ে কারা কথা বলবেন, তাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। মিডিয়া সমন্বয়কারী করা হয়েছে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে। বিভিন্ন সংবাদ চ্যানেলে বা সংবাদমাধ্যমে দলের তরফে কারা প্রতিনিধিত্ব করবেন, সেই নামের তালিকা দল পরে জানাবে বলে সাংবাদিক বৈঠকে জানান মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

তৃণমূলের অন্দরের খবর, রাজ্যসভা সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়কে দল শো কজ করতে চলেছে। আর জি কর-কাণ্ডে তাঁর মুখ খোলাকে দল ভালোভাবে নেয়নি। এদিন বৈঠকে অভিষেক বলেন, সুখেন্দুকে আরও আগে শো কজ করা উচিত ছিল। নেত্রীও অভিষেকের কথায় সায় দেন। তারপরই ঠিক হয়, শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তাঁকে শো কজ করবে। চন্দ্রিমা জানান, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে দল তাঁকে শো কজ করবে। পরপর তিনবার শো কজের জবাব না দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সাসপেন্ড করা হবে। তিনি সাংসদ হন, বিধায়ক হন কিংবা দলের পদাধিকারী হন। প্রসঙ্গত, এদিন জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে ডাক পাননি প্রবীণ নেতা সুথেন্দু শেখর রায়। তাঁকে যে ডাকা হয়নি, তা সাংবাদিক বৈঠকে স্বীকার করে নেন চন্দ্রিমা। আরজি কর কাণ্ডের পর থেকেই সুখেন্দুর সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি হয়। বৈঠকে ছিলেন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। নেত্রী তাঁর কানে কানে কিছু কথা বলেন। আরজি কর থেকে শুরু করে সম্প্রতি আইনশৃহ্খলার প্রশ্নে দলের অনেক নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ বেফাঁস মন্তব্য করে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন। দল এবার তাই শৃঙ্খলার প্রশ্নে কড়া অবস্থান নিতে চায়। সেই কারণেই তিন স্তরীয় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে দলের একটিই শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি ছিল। আর ১৭ মাস পরেই বিধানসভা ভোট। তাকে মাথায় রেখেই দলকে শৃঙ্খলার নিগড়ে বাঁধতে চলেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বৈঠকে মমতা বলেন, এই মুহূর্তে দলের শৃঙ্খলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

দিল্লিতে জাতীয় স্তরে গুরুত্ব আরও বাড়ছে অভিষেকের। জাতীয় বিভিন্ন বিষয়ে তিনি কথা বলবেন মিডিয়ার সঙ্গে। জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে ২৭ করা হয়েছে। কর্মসমিতিতে এলেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, দুই সাংসদ মালা রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া এবং জাভেদ খান। চন্দ্রিমা এদিন দলের বেশকিছু কর্মসূচির কথাও ঘোষণা করেন।

Share the Post:

Related Posts