রাজ্যজুড়ে ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা

গরমের দাবদাহের মাঝে স্বস্তির বার্তা নিয়ে এল চৈত্রের বৃষ্টি। শনিবার সকাল থেকেই কলকাতা ( Kolkata ), উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টির ( Rain ) দেখা মিলেছে। শীতের ( winter ) রেশ মিলিয়ে যাওয়ার পর আচমকাই ঠান্ডা হাওয়া বয়ে চলেছে, যা নিয়ে বেশ খুশি শহরবাসী। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শনি ও রবিবার দিনভর বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে, যার ফলে তাপমাত্রার পারদ অনেকটাই নিচে নেমে যেতে পারে। বিকেলের দিকেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতা ও আশেপাশের জেলাগুলিতে। সেই সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। হাওয়া অফিসের মতে, এই আবহাওয়া আগামী কয়েকদিন বজায় থাকবে। ফলে গ্রীষ্মের প্রখর দাবদাহের আগে স্বস্তির শীতল আমেজ পাচ্ছেন রাজ্যবাসী। তবে এই বৃষ্টির প্রভাব পড়তে পারে শনিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় অনুষ্ঠিতব্য আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। এর পরেই রয়েছে বিরাট কোহলির বেঙ্গালুরু দলের ম্যাচ, যেখানে আবহাওয়ার চোখ রাঙানি থাকতে পারে। ম্যাচের সময় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে কিছুটা আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুধু দক্ষিণবঙ্গেই নয়, উত্তরবঙ্গেও ব্যাপক বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি সহ মোট আটটি জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় আবহাওয়া দফতর সতর্কতা জারি করেছে। বঙ্গোপসাগর থেকে বিপুল জলীয় বাষ্প ঢুকছে, যা বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেবে। সেই সঙ্গে অক্ষরেখার প্রভাবও রয়েছে, যার ফলে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে ঝড়বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত এই বৃষ্টিপাত চলবে। ফলে মার্চের শুরুতে যে তীব্র গরম অনুভূত হয়েছিল, তা খানিকটা হলেও কমবে। রাজ্যবাসী আপাতত স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেও, বৃষ্টি কতদিন ধরে চলবে এবং তার প্রভাব কেমন হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

আইপিএলের প্রথম ম্যাচে কলকাতাকে হারাল বেঙ্গালুরু

প্রথম ম্যাচেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নস কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ৭ উইকেটে হারাল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (KKR vs RCB)। ২২ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নিল বেঙ্গালুরু। আর কলকাতার শুধু হার নয়, রান রেটেও অনেকটা পিছিয়ে গেল কেকেআর। তবে ইডেনের আসা দর্শকদের রথ দেখা এবং কলা বেচা, দুটোই ভাল ভাবে হল। শাহরুখ খানের সঙ্গে কোহলির কোমর দোলানো যেমন দেখতে পেলেন, তেমনই ব্যাট হাতে কোহলির ম্যাচ জেতানো ইনিংসেরও সাক্ষী থাকা গেল। উপরি পাওনা শ্রেয়া ঘোষাল, করণ আউজলার গান এবং দিশা পটানির নাচ। এদিন টসে জিতে কলকাতাকে ব্যাট করতে পাঠায় বেঙ্গালুরুর নতুন অধিনায়ক রজত পাতিদার। ব্যাট করতে নামেন কুইন্টন ডি-কক এবং সুনীল নারিন। পাওয়ার প্লে-র প্রথম তিন ওভারে কলকাতা নাইট রাইডার্সের মাত্র ৯ রান ওঠে। একটা চার মেরে আউট হন ওপেনার কুইন্টন ডি-কক। জশ হ্যাজলউডদের বলের বাউন্স দেখে মনে হচ্ছিল ইডেন গার্ডেন্স নয়, খেলা হচ্ছে পার্থের পিচে। দলের নতুন অধিনায়ক অজিঙ্ক্য রাহানে দুটো বল দেখলেন, তারপরেই সবাইকে ইডেনে ফিরিয়ে আনলেন। সুনীল নারিনকে নিয়ে পরের তিন ওভারে তুললেন ৫১। অর্থাৎ পাওয়ার প্লে-তে উঠল কাঁটায় কাঁটায় ৬০। রাহানে-নারিন জুটি ৯.৫ ওভার পর্যন্ত ঝড় চালাল। দশম ওভারের শেষ বলে ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার আউট হলেন। ২৬ বলে ৪৪ করলেন তিনি। অধিনায়ক ৩১ বলে ৫৬ করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরলেন। দ্রুত আউট হলেন রাহানের ডেপুটি ভেঙ্কটেশ আইয়ারও (৭ বলে ৬)। এই সময়টা কিছুটা চাপে পড়েছিল কেকেআর। ক্রুনাল পান্ডিয়ার সাহায্যে কিছুটা ম্যাচে ফিরছিল আরসিবি। রাহানে, আইয়ার এবং রিঙ্কুকে ফেরালেন তিনি। এরপর আন্দ্রে রাসেলকে ফেরালেন গত বছর কেকেআর-এ খেলা সুযশ শর্মা। একটা সময় ২০০ পার অনায়াস মনে হচ্ছিল, কিন্তু রাসেলের পতনে আবার চাপে পড়ে নাইট শিবির। স্পিনারদের দাপটে রান ওঠার গতি কমে গেল। তবে তরুণ অঙ্গকৃশ রঘুবংশী ফের প্রতিভার ঝলক দেখালেন। স্লগ নয়, খাঁটি ক্রিকেটীয় শট খেলে বাউন্ডারি মারলেন। কিন্তু মোক্ষম সময়ে আউট হয়ে গেলেন। ২০ ওভারে শেষ পর্যন্ত ১৭৪ করল কেকেআর। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বিরাট কোহলি এবং ফিল সল্ট মিলে যে ইনিংসটা খেললেন প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে, সেটাই দীর্ঘ দিন পরে কলকাতার বিরুদ্ধে জেতাল বেঙ্গালুরুকে। ফিল্ট সল্ট শুরুতেই ঝড় তুললেন। পাওয়ার প্লে-তে বরুণ চক্রবর্তীর এক ওভারে নিলেন ২১ রান। পাওয়ার প্লে কোনও উইকেট না হারিয়েই আরসিবি ৮০ করে ফেলল এবং ম্যাচ ওখানেই কেকেআরের হাত থেকে ফসকে গেল। সল্ট ফিরে গেলেও আরসিবিকে জয়ের রাস্তায় নিয়ে গেলেন, আর কে? বিরাট কোহলি। আরসিবি অধিনায়ক রজত পতিদার ভালো ইনিংস খেললেন, লিয়াম লিভিংস্টোন নেমে দ্রুত ম্যাচ শেষ করে দিলেন। তবে আরসিবির জয়ের আসল কারিগর ক্রুনাল পান্ডিয়া। চার ওভারে ২৯ দিয়ে তিন উইকেট নিলেন। অজিঙ্ক্য রাহানে এবং সুনীল নারিন তাণ্ডব চালাচ্ছিলেন। রাহানেকে প্রথমে আউট করলেন হার্দিকের দাদা, তারপর ভেঙ্কটেশ আইয়ার এবং রিঙ্কু সিংকে বোকা বানালেন। ক্রুনালের ওই স্পেলই আরসিবিকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনল।