জাতীয় মহিলা কমিশন মেদিনীপুর মেডিক্যালে

প্রসূতি মৃত্যু ও সদ্যজাতের মৃত্যু সেই সঙ্গে স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে খতিয়ে দেখতে মেদিনীপুর মেডিক্যালের (Medinipur Medical) গেল জাতীয় মহিলা কমিশন (National Commission for Women)। শনিবার জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদারের নেতৃত্বে মেদিনীপুর মেডিক্যালে সাড়ে এগারোটা নাগাদ আসেন। তারা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল মৌসুমী নন্দী,সুপার ইন্দ্রনীল সেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারীদের সঙ্গে এক জরুরী বৈঠকে বসেন। পুরো ঘটনা আর পুঙ্খানুপুঙ্খ তিনি খতিয়ে রাখেন। জাতীয় মহিলা কমিশন থেকে মহিলা কমিশনের সদস্যা ডাঃ অর্চনা মজুমদার নেতৃত্বে এক সদস্যের প্রতিনিধি এসে পৌঁছলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এসে উনি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দী ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য শংকর সারেঙ্গী সহ হাসপাতালের বৈঠকে বসেন।এদিন এই বৈঠকে গত ৯ জানুয়ারির সেই প্রসূতি অপারেশনের যারা যারা যুক্ত ছিলেন তাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সূত্রের খবর বৈঠকের পরেই তার মাতৃমা পরিদর্শন করেন। মৃত প্রসূতির পরিবারের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে। পাশাপাশি তিনি এসএসকেএম গিয়ে বাকি অসুস্থ তিন প্রসূতিকে দেখে আসবেন বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, পূর্ণ কর্মবিরতির পথে যাচ্ছেন না মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র চিকিৎসকরা। দীর্ঘ বৈঠকের পর নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তাঁরা। আজ থেকে চলবে আংশিক কর্মবিরতি। রোগী পরিষেবা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেদিকে নজর রেখেই আপাতত আংশিক কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত জুনিয়র ডাক্তারদের। স্যালাইন কাণ্ডে প্রসূতি মৃত্যুতে তোলপাড় রাজ্য, চিকিৎসকদের গাফিলতির তত্ত্ব খাড়া করেছেন স্বাস্থ্য়মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। স্যালাইনকাণ্ডে ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরজি কর কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়

কলকাতা: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হলেন সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। শনিবার শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস ওই রায় ঘোষণা করেন (RG Kar Case Verdict)। আরজি কর-কাণ্ডে একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে সঞ্জয়ের নাম করেছিল সিবিআই। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের পর মৃত্যু) এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সঞ্জয়কে। আগামী সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রায় ঘোষণা করবে আদালত, জানালেন বিচারক অনির্বাণ দাস। রায় শুনে চোখে জল নির্যাতিতার বাবার। তিনি বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনার উপর যে আস্থা ছিল, তার পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছেন।’’ বিচারক দাস প্রত্যুত্তরে বলেন, ‘‘সোমবার আসুন।’’ বিচারক দাস সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় ঘোষের উদ্দেশে বলেন, ‘‘সিবিআই এবং সাক্ষীদের বয়ানের ভিত্তিতে যা মনে হয়েছে তাতে দোষী সাব্যস্ত করব আপনাকে। আপনার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে মৃত্যুদণ্ড।’’ সেটা শুনে সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমি কিছু করিনি। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। আমার কথাটা এক বার শুনুন।’’ বিচারক রায় ঘোষণা করে বলে দেন, ‘‘সোমবার আপনার কথা শুনব।’’
আর কিছুক্ষণ পরেই আরজি কর কাণ্ডের রায়দান

সেই ২০২৪-এর ৯ অগাস্ট আর আজ ২০২৫ সালের ১৮ জানুয়ারি। মাঝখানে কেটে গিয়েছে পাঁচ মাস নয় দিন। শিয়ালদহ আদালতে (Sealdah Court) আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের (RG Kar Medical College and Hospital) সেই নারকীয় কাণ্ডের আজ রায় ঘোষণা। এই শহর কিংবা এই রাজ্য শুধু নয়, গোটা দেশের নজর সেদিকেই। রায় ঘোষণা করবেন বিচারক অনির্বাণ দাস (Judge Anirban Das)। এই পাঁচ মাসে কতকিছু ঘটে গিয়েছে। শুরুতে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) তদন্তে নামে এবং দ্রুত ধর্ষণ-খুন কাণ্ডের একমাত্র অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে (Sanjay Ray) গ্রেফতার করে। এরপর তদন্তভার চলে যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের (CBI) হাতে। তাদের জালে জড়ান আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। তবে ধর্ষণ-খুনের মামলায় তাঁরা জড়াননি, জড়িয়েছিলেন তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে। তবে আপাতত দুজনেই জামিনে মুক্ত। এদিকে এই ঘটনার জেরে অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখেছিল মহানগরী। স্বতস্ফূর্ত প্রতিবাদের ঢল নামে রাজপথে, শহরতলির অলিগলিতে। আন্দোলনে নামেন সরকারি হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁদের কর্মবিরতি ঘোষণা, ধর্মতলায় আমরণ অনশনে বসা এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একাধিক আলোচনার পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার, এই সবই ঘটে গিয়েছে এই পাঁচ মাসে। অন্যদিকে চলেছে সিবিআইয়ের তদন্ত। আরজি কর মামলায় মোট ৫০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে নিম্ন আদালত। সাক্ষ্য দিয়েছেন নিহত চিকিৎসকের পিতা, সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক, কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিক, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং নিহতের কয়েকজন সহপাঠী। আজ সেই সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ, পারিপার্শ্বিক প্রমাণে নজর রেখেই রায় দেবেন বিচারক। ১৮ জানুয়ারি এক বিশেষ দিন হতে চলেছে।