জানুয়ারিতে ফের দুয়ারে সরকার

নতুন বছরের প্রথম মাসেই দুয়ারে সরকার ক্যাম্প (Duyare Sarkar Camp) হতে চলেছে। সন্দেশখালিতে (Sandeshkhali) একটি সরকারি অনুষ্ঠানে সোমবার এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রী জানান, দুর্গম এলাকায় যাঁরা জাতি শংসাপত্র পাননি, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাননি তাঁদের জন্য জানুয়ারির শেষ থেকে ফের দুয়ারে সরকার ক্যাম্প হবে। তা আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। এই দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে আবেদন করেন বাসিন্দারা। এর ফলে এক জায়গায় আবেদন করার সুযোগ পেয়েছেন প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা। ওই শিবির চলাকালীনই নথিভুক্ত হতে পারেন এলাকাবাসী। বিভিন্ন সরকারি স্কলারশিপ ছাড়াও লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থসাথী কার্ড, বার্ধক্যভাতার মতো সুবিধা পাওয়ার আবেদন এখানে করা যায়। এছাড়া এখন পঞ্চায়েতে মিউটেশন বা জমির রেকর্ডও করা যায় এই দুয়ারে সরকার ক্যাম্প থেকে। ক্যাম্পগুলিতে দীর্ঘ লাইন দেখে বোঝা যায় এই উদ্যোগে কতটা ভরসা পেয়েছেন গ্রাম বাংলার মানুষ। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের এক ডিসেম্বর দুয়ারে সরকার ক্যাম্প চালু হয়। সরকারি অফিসে গিয়ে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকার দিন শেষ করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। যাতে ঘরের দুয়ারে সরকারে এসে গিয়েছে বোঝানো হয়েছিল। গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরসভা এলাকায় এই দুয়ারে সরকার শিবির করা হয়। যেখানে এক ছাতার তলায় সব সরকারি পরিষেবা পাওয়ার জন্য আবেদন করা যায়। এই ক্যাম্প শুরু থেকেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকে অপেক্ষা করে থাকেন পরের বার দুয়ারে সরকার ক্যাম্প কখন হবে। যদি নতুন কোনও জনকল্যাণ প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যায়।
গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি কীরকম?

দরজায় কড়া নাড়ছে নতুন বছর। হাতে মাত্র আর একটা দিন। তারপরেই সবাই মেতে উঠবে বর্ষবরণে। অন্যদিকে জানুয়ারি মাসেই নববর্ষের সূচনার সঙ্গেই প্রস্তুতি ঘন্টা বেজে যায় গঙ্গাসাগর মেলার। আপামোর বাঙালি অপেক্ষা করে থাকে এই মেলার জন্য। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকেও গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন রকম নির্দেশিকা। আর এবার জোর কদমে চলছে সাগর মেলার প্রস্তুতি। গঙ্গাসাগরে ভিড় এড়াতে ইতিমধ্যেই সাগরপাড়ে ভিড় জমাচ্ছেন বহু পূর্ণার্থী। সাগর মেলার আগেই সেখানে চলছে পূজার্চনা থেকে শুরু করে সাগর স্নান। প্রত্যেক বছর বহু পূর্ণার্থী ভিড় করে গঙ্গাসাগরে। সেই ভিড় এড়ানোর জন্য ইতিমধ্যেই বৃদ্ধি করা হয়েছে পরিধি। যার জেরে মেলার দিনগুলিতে ভিড় বেশি হলেও তা সামাল দেওয়া যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কথাতেই আছে ‘ সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার’। ৮ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে শুরু হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা। তাই যত সময় এগিয়ে আসছে ততই গঙ্গাসাগরের প্রস্তুতি একেবারে তুঙ্গে। ইতিমধ্যেই পূর্ব রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে গঙ্গাসাগরের জন্য বাড়তি ট্রেন পরিষেবা চালু করা হবে। যার জেরে পূর্ণার্থীরা আরও সুবিধা পাবেন বলেই আশা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য গঙ্গাসাগর মেলায় যাতে কোনরকম অপ্রতিকূল অবস্থার সূচনা না হয় তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেলা শুরু হওয়ার আগে সেখানে উপস্থিত হবেন বলে জানা যাচ্ছে।
স্টার থিয়েটারের নাম বদল

নতুন বছরে নতুন নাম পেল ঐতিহ্যবাহী প্রেক্ষাগৃহ ‘স্টার থিয়েটার’ (Star Theatre Name Change)। সোমবার সন্দেশখালিতে দাঁড়িয়ে এই নামবদলের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মমতা ঘোষণা করলেন প্রেক্ষাগৃহের নতুন নাম ‘বিনোদিনী মঞ্চ’। প্রায় প্রায় ১৪০ বছরের এক নারীর লড়াই সম্মান পেল। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিকেলেই নামফলক বদল করে দেয় পুরসভা। স্টার থিয়েটারের নাম হবে ‘বিনোদিনী মঞ্চ’ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা শুনে কেঁদেই চলেছেন অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র (Rukmini Maitra)। মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগে খুশি অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী (Sudipta Chakraborty)। ২০২৫ সালে মুক্তি পাবে রুক্মিণী অভিনীত রামকমল মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি ‘বিনোদিনী:নটীর উপাখ্যান’। বিনোদিনী দাসীর জীবনের কাহিনীর উপর ছবি তৈরি করেছেন পরিচালক।আর বছরের শেষ হওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে আবেগঘন হয়ে পড়লেন অভিনেত্রী রুক্মিনী মৈত্র। রুক্মিণী বললেন, “দিদি ঘোষণা করার পর থেকে আমি শুধু কেঁদেই চলেছি। চোখের জল আটকে রাখতে পারছি না।” বিনোদিনী হয়ে নাটকের মঞ্চে সবার মন কেড়ে নিয়েছেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। তাঁর অসাধারণ অভিনয়ে মুগ্ধ দর্শক থেকে সমালোচক। নাটকের শেষেই দর্শকদের সামনে সুদীপ্তা ও টিম অনুরোধ করেছেন স্টার থিয়েটারেক নাম পরিবর্তনের। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে নতুন বছরে স্টার থিয়েটারের নাম বিনোদিনী থিয়েটার। সুদীপ্তার কথায়, ”একটু আগেই খবরটা জানাল। আমরা গত ৩১টি অভিনয়েই এই দাবি রেখেছি, স্টার থিয়েটার যেন বিনোদিনীর নামে হয়। শুধু আমাদের দাবি নয়, সাধারণ মানুষও এই দাবিকে সমর্থন করেছেন। অবশেষে সেটা যে অবশেষে বাস্তবায়িত হল। দারুন বিষয়। ১৮৮৩ সালে স্থাপিত এই নাট্যমঞ্চের নেপথ্যের কারিগর ছিলেন বিনোদিনী দাসী। প্রসঙ্গত নটি বিনোদিনী সমাজের সকল স্তরের মানুষই তার অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়েছিলেন। এই থিয়েটারে এককালে নাটক দেখতে যেতেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথঠাকুর-সহ একাধিক ব্যক্তিত্বরা। তার প্রশংসকদের তালিকায় ছিলেন রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ, বঙ্কিমচন্দ্র, ফাদার লাঁফো, এডুইন আরনল্ড, কর্ণেল অলকট প্রমুখ। রামকৃষ্ণদেব তার চৈতন্যলীলার অভিনয় দেখে তাকে গ্রীনরুমে গিয়ে চৈতন্য হোক বলে আশীর্বাদ করেছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র তার উপন্যাসের চরিত্রগুলিকে বিনোদিনীর মধ্যে দিয়ে সফলভাবে গড়ে উঠতে দেখেছিলেন। তার অভিনয়ের গুরু গিরিশচন্দ্র ঘোষ তার বহু প্রশংসা করেছিলেন। বিনোদিনীর ত্যাগ স্বীকারে যে নতুন থিয়েটার তৈরি হয় বিনোদিনীর নাম তাতে থাকেনি। এই নতুন থিয়েটারের নাম হয় স্টার থিয়েটার। এই বিশ্বাসঘাতকতায় যখন বিনোদিনী দুঃখে বেদনায় মন ভেঙে পড়ে। ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দে মাত্র ২২-২৩ বছর বয়েসে তিনি রঙ্গমঞ্চ ত্যাগ করে যান। তারপর দীর্ঘদিন জীবিত থাকলেও কখনও অভিনয়ে ফিরে আসেননি। ফলে বাংলা থিয়েটার বঞ্চিত হয় এক অসামান্য অভিনেত্রীর প্রতিভা এবং অভিনয় থেকে।যৌনকর্মীর সন্তান হওয়ার পর থেকে বারবার জীবনের নানা মুহূর্তে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন নটী বিনোদিনী। ১৮৮৩ সালে ৬৮ বিডন স্ট্রিটে নির্মিত হল থিয়েটার ভবন। কথা ছিল, বিনোদিনীর নাম অনুসারে তার নাম হবে বি থিয়েটার, কিন্তু গিরিশচন্দ্র ও অন্য পুরুষ অভিনেতাদের চক্রান্তে থিয়েটারটি ‘স্টার থিয়েটার’ নামে রেজিস্ট্রি হল। বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হলেন বিনোদিনী। কিন্তু আজকে থ্রেটের জগতের তারা অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্টার থিয়েটারের নাম বিনোদিনী থিয়েটার করার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সমস্ত স্তরের মানুষ। আজকেই স্টার থিয়েটারের নাম তুলে দিয়ে বিনোদিনী থিয়েটারের বোর্ড লাগানো হছে।
‘কালীঘাটের কাকু’ গুরুতর অসুস্থ

সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’ গুরুতর অসুস্থ। তাঁকে এসএসকেএম থেকে স্থানান্তরিত করা হয় আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। আপাতত তাঁকে রাখা হয়েছে ভেন্টিলেশনে। উল্লেখ্য, আজ অর্থাৎ সোমবার আদালতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির তরফ থেকে চার্জসিট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। আজ সেই মামলায় শুনানি শুরু হওয়ার আগেই ‘কালীঘাটের কাকু’-র শারীরিক অসুস্থতার কারণে চার্জ গঠন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। তাঁকে সোমবার সকালেই ভর্তি করানো হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। কারণ হঠাৎই সংজ্ঞা হারান তিনি। বহু দিন ধরেই হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন ‘কালীঘাটের কাকু’। অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে আজ প্রেসিডেন্সি জেল থেকেই নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমে। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে সন্ধ্যেবেলা স্থানান্তরিত করা হয় আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। উল্লেখ্য, এর আগেও ‘কালীঘাটের কাকু’কে ভর্তি করানো হয় ওই বেসরকারি হাসপাতালে। তাই আদালতে আজ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের আইনজীবী আবেদন করেন যেন আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালেই ভর্তি করানো হয় তাঁকে। কারণ সেখানেই তাঁর অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। কারণ অভিযুক্তের নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হবে বলে জানান সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের আইনজীবী। আর তারপরেই আজ বিকেলে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় বেসরকারি এক হাসপাতালে।