বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি কেন?

বিশ্বজুড়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয় জানুয়ারির প্রথম দিনেই। কিন্তু কেন ১ জানুয়ারি বছরের প্রথম দিন হিসেবে পালিত হয়, তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে। সেইসঙ্গে, বছরের প্রথম মাসের নাম কেন জানুয়ারি, তা নিয়েও রয়েছে ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা। ২০২৪ সালের শুরুতে, আসুন জেনে নিই এই ঐতিহাসিক পটভূমি। প্রায় ২,০০০ বছর আগে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার একটি ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেন, যা আজকের গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের পূর্বসূরী। ১ জানুয়ারি রোমান পেগান উৎসবের দিন হিসেবে পালিত হতো। পরে, এই দিনটিকেই ইংরেজি বছরের প্রথম দিন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তবে এর আগে ২৫ মার্চ বা ২৫ ডিসেম্বরকেও বছরের প্রথম দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। জানুয়ারি নামটির উৎপত্তি রোমান দেবতা জানুসের নাম থেকে। জানুস ছিলেন দ্বিমুখী দেবতা, যিনি একদিকে অতীত এবং অন্যদিকে ভবিষ্যৎ দেখার ক্ষমতা রাখতেন। ল্যাটিন ভাষায় জানুয়ারিকে ‘ইয়ানুরিয়া’ বলা হতো, যা জানুসের প্রতি উৎসর্গিত। তাই জানুয়ারিকে নতুন শুরুর প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জানুয়ারির প্রতীকী গুরুত্ব অনেক গভীর। ব্রিটেনের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডায়ানা স্পেনসার জানিয়েছেন, জানুসের এক মুখ অতীতের দিকে এবং অন্য মুখ ভবিষ্যতের দিকে নির্দেশ করে। জানুয়ারি মাস তাই অতীত এবং ভবিষ্যতের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি, শীতের পরে এই সময় দিন বড় হতে শুরু করে, যা কৃষিজীবীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার সূচনা করে। বর্তমান যে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার আমরা অনুসরণ করি, তা ষোড়শ শতকে পোপ গ্রেগরি ত্রয়োদশ প্রবর্তন করেন। সেই সময় থেকেই ১ জানুয়ারি নতুন বছরের প্রথম দিন হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। আজকের দিনে বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই এই ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা হয়। এভাবেই জানুয়ারি এবং ১ জানুয়ারি আমাদের জীবনে একটি বিশেষ স্থানে পৌঁছেছে।

পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বড় রায় সুপ্রিম কোর্টের

তফশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের মহিলাদের (Schedule Tribe Women) সমান উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা অসাংবিধানিক ও অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। সংবিধানে মহিলাদের সমানাধিকার স্বীকৃত হলেও, তফশিলি উপজাতির মহিলারা আজও এই অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাই ১৯৫৬ সালের হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে (Hindu Succession Act, 1956) প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে (Government of India) আহ্বান জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। বিচারপতি সিটি রবি কুমার ও বিচারপতি সঞ্জয় কারলের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছে, যেখানে অনুপ্রজাতীয় পরিবারের মেয়েরা পৈতৃক সম্পত্তির সমান অধিকার পায়, সেখানে তফশিলি উপজাতি পরিবারের মেয়েদের এই অধিকার দেওয়া হয় না, তা যুক্তিসঙ্গত নয়। আদালত আরও উল্লেখ করেছে, হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের ২(২) ধারায় তফশিলি উপজাতিদের জন্য বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার যদি অফিসিয়াল গেজেটে কোনও নির্দেশিকা প্রকাশ না করে, তাহলে তফশিলি উপজাতির মহিলাদের এই অধিকার প্রযোজ্য হবে না। এই মামলার সূত্রপাত ছত্তিশগড় হাইকোর্টের একটি রায় থেকে। সওয়ার সম্প্রদায়, যা সংবিধানের ৩৪২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তফশিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃত, সেই সম্প্রদায়ের এক মহিলার পৈতৃক সম্পত্তির অধিকার নিশ্চিত করেছিল হাইকোর্ট। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হলে, আদালত মহিলারর পক্ষে মত দেয় এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে সংশোধনের প্রস্তাব বিবেচনা করার নির্দেশ দেয়। আদালতের মতে, এই সংশোধনের মাধ্যমে শুধু তফশিলি উপজাতির মহিলাদের সমানাধিকার নিশ্চিত হবে না, বরং দেশের সংবিধান-স্বীকৃত সমানাধিকারের নীতিও রক্ষা পাবে।