‘ভূতচতুর্দশী!’ পুরানের কথা জানেন?

‘ভূতচতুর্দশী!’ নাম শুনলে গা ছমছম ভাব হয়? কিন্তু আদপে উৎসব হিসেবে পালন করা হয় এই দিনটিকে। আপাত দৃষ্টিতে দেখলে ভূতের সঙ্গে মানুষের এক অম্ল মধুর সম্পর্ক রয়েছে যুগ যুগ ধরে। ছোটবেলায় বাচ্চাদের ভূতের গল্পের বই উপহার দেওয়া থেকে, দাদু, ঠাকুমার কাছে ভূতের গল্প শোনার মধ্যে দিয়ে বড় হতে হতে ভূতের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে। এরপর তার হাত ধরেই আমাদের জীবনে আসে ভূতচতুর্দশী। নানাবিধ উপাচার ও উৎসবের মধ্যে দিয়ে পালিত হয় এই প্রচলিত প্রথা। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, প্রতি বছর আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষে পালিত হয় চতুর্দশী তিথি। কালীপুজোর সঙ্গে এই ভূতচতুর্দশীর সম্পর্ক রয়েছে। কালীপুজোর ঠিক এক রাত আগে পালিত হয় বাঙালির ভূতচতুর্দশী বা নরক চতুর্দশী। কখনও কখনও আবার একই দিনে পালিত হয় দুই উৎসব। এরপর সন্ধ্যাবেলা ১৪টি প্রদীপ জ্বালান অনেকে। প্রচলিত রীতি অনুসারে, বাঙালিরা এ দিন ঘরে ঘরে ১৪টি তিলের প্রদীপ আলাদা করে রাখেন। তারপর একসঙ্গে জ্বালান সেগুলি। তবে পুরাণে ভূত চতুর্দশী নিয়ে বিশেষ কিছু পাওয়া যায় না। যা জানা যায় তা হল- দানবরাজ বলি যখন স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল দখল করে নিলেন, তখন নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়ে গেল। তার আক্রোশ থেকে পার পেলেন না দেবতারাও। বলির তাণ্ডব ঠেকাতে দেবগুরু বৃহস্পতি ভগবান বিষ্ণুকে একটি উপায় বাতলে দিলেন। বামনের ছদ্মবেশে তখন নেমে এলেন বিষ্ণু, তিন পা সমান জমি ভিক্ষা চাইলেন রাজা বলির কাছে। দানবরাজ কিন্তু শুরুতেই বুঝেছিলেন এই বামন আর কেউ নন, স্বয়ং বিষ্ণু। কিন্তু এরপরও না বোঝার ভান করে বামনের পাল্লায় পড়ে ঠিকই রাজি হলেন চুক্তিতে। দুই পা দিয়ে স্বর্গ ও মর্ত্য দখল করে ফেললেন বিষ্ণু। এরপর নাভি থেকে বের হয়ে এলো আরেক পা, যা রাখলেন বলি রাজার মাথার উপর। সঙ্গে সঙ্গেই পাতালে নেমে গেলেন দানবরাজ বলি। সেই থেকে পাতালই হল তার আবাস। বলিরাজ জেনে বুঝেও দান করেছিলেন বলে, ভগবান বিষ্ণু রাজা বলির নরকাসুর রূপের পুজোর প্রবর্তন করেন। নরকাসুররূপী রাজা বলি কালীপুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশীর তিথিতে অসংখ্য অনুচর-সহ ভূত, প্রেত নিয়ে মর্ত্যে নেমে আসেন পুজো নিতে। অনেক সময় বলা হয়ে থাকে, ভূত চতুর্দশীর দিন পরলোকগত চৌদ্দ পুরুষের আত্মারা নিজ নিজ বাড়িতে নেমে আসেন। তাই তাদের আসা যাওয়ার পথকে আলোকিত করতেই নাকি এই দিন সন্ধ্যাবেলা প্রদীপ জ্বলানোর রীতি। হিন্দু শাস্ত্রমতে বলা হয়, এই তিথিতে সন্ধ্যা নামার পর পরই অশরীরী প্রেতাত্মারা বের হয়ে আসেন। আর তাদের হাত থেকে নিস্তার পেতে সন্ধ্যায় পর গৃহস্থের বাড়িতে ১৪টি প্রদীপ জ্বালানোর নিয়ম। হিন্দু শাস্ত্রমতে থাকলেও ভূত চতুর্দশী অবশ্য একান্তই বাঙালির উৎসব বলা চলে। আবার এমনও শোনা যায়, এই দিনে ‘চামুণ্ডা’ রূপে চৌদ্দ ভূত দিয়ে ভক্তদের বাড়ি থেকে অশুভ শক্তি দূর করতে নেমে আসেন মা কালী। মাকে স্বাগত জানাতেই নাকি প্রদীপ জ্বালানোর ব্যবস্থা।

৫০০ বছরের এই পুজোর কথা জেনে নিন

‘মায়ের পায়ের জবা হয়ে ওঠ না ফুটে মন’-এই শ্যামা সঙ্গীতের সুর আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হতে শুরু করেছে। হাতে আর মাত্র দু’দিন বাকি। বৃহস্পতিবার শ্যামা মায়ের আরাধনায় মেতে উঠবে আপামর বাঙালি। অনেক পুজো মণ্ডপের উদ্বোধনও শুরু হয়ে গিয়েছে। শহর কলকাতা ছাড়াও রাজারহাট, বারাসত, মধ্যমগ্রামের বিরাট বহরের কালী আরাধনা ছাড়াও জেলায় ছড়িয়ে রয়েছে বহু প্রাচীন কাল থেকে চলে আসা মাতৃ পুজো। বহু ইতিহাসের সাক্ষী সেই সব কালীপুজো চাক্ষুষ করতে রাত জাগবেন অনেকেই। সেরকমই একটি আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার ৫০০ বছরের পুরনো কালীপুজো, ফালাকাটা শ্রীশ্রী আদি জংলা কালীমাতা মন্দিরে পুজোর প্রস্তুতি চরমে। কথিত, এক সময় ফালাকাটার মুজনাই নদীর পাড়ে ঘন জঙ্গল ছিল। সেখানে বন্য পশুরা বাস করত।  নদী দিয়ে চলত নৌকায় বাণিজ্য।  দীপান্বিতা অমাবস্যার রাতে কাঁসর ঘণ্টার আওয়াজ পেত জনগণ।  পরের দিন সকালে দেখাযেত সেখানে মা কালীর মূর্তি পুজো হয়েছে। পুজোর সামগ্রী  পড়ে রয়েছেl  এরপর ধীরে ধীরে সেখানে বন জঙ্গল কেটে জনবসতি গড়ে উঠতে থাকে। সেই অজানা লোক নৌকো করে এসে আর পুজো দেয় না। এরপর থেকেই এলাকাবাসী সেখানে মন্দির গড়ে পজো করা শুরু করেনl  সাধক বামাক্ষ্যাপাও না কি এই মায়ের মন্দিরে ধ্যান এবং সাধনা করে গিয়েছেন। বামাক্ষ্যাপার সেই ধ্যান এবং সাধনা করার বেদীটি এখনও রয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণে। সেটিকেও পুজো করা হয়l  তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই পুরনো নিয়ম নীতির কোনও ভাটা পড়েনি l  এখনও নিয়ম করে প্রতিদিনই পুজো হয় অমাবস্যায়। বিশেষ ভোগ হয়। কালীপুজোর দিন শতাধিক পাঁঠা বলি হয়। পাঁঠা ও কবুতর উৎসর্গ করা হয় মায়ের উদ্দেশ্যে।  ভক্তরা জানান, তাঁরা এখানে  মায়ের কাছে মানত করে ফল পেয়েছেন সেই কারণেই তাঁরা এখানে পাঁঠা কবুতর উৎসর্গ করেন এবং বলি দেন l

আজ সোনার দাম জেনে নিন

ওয়েব ডেস্ক: ‘ধন’ শব্দের অর্থ ধনসম্পত্তি এবং ‘তেরাস’ শব্দের উৎপত্তি ত্রয়োদশী তিথি থেকে। অর্থাৎ, ত্রয়োদশী তিথিতে পালিত উৎসব। শুরু হয়ে গিয়েছে ধনতেরসের সেই শুভ সময়। সকাল ১০টা ৩১ মিনিট থেকে ৩০ অক্টোবর বুধবার সকাল ৬টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত থাকছে সোনা কেনার শুভ সময়। সোনার দাম কত ধনতেরাসে? ২১ অক্টোবরই সর্বকালীন উচ্চতায় পৌঁছয় সোনার দাম। ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট হলুদ ধাতু বিক্রি হয়েছে ৮০ হাজার ৩৩০ টাকায়। তবে সেই দামে এই ক’দিনে বড়সড় হেরফের হয়নি। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার সোনার দাম কিছুটা নেমেছে। তার ফলে ধনতেরসের আগে অল্প হলেও হাসি ফুটেছে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মুখে। এদিন ১০ গ্রাম ২২ ক্যারাট হলমার্ক সোনার গহনার দাম ৭৫১০০ টাকা। ২৪ ক্যারাট পাকা ১০ গ্রাম সোনার দাম ৭৯,০০০ টাকা।

অযোধ্যাকে আলোয় সাজিয়ে তোলা হচ্ছে

ওয়েব ডেস্ক: দীপাবলিতে বারাণসী এবং অযোধ্যাকে আলোয় সাজিয়ে তোলা হয় প্রতি বছরই। এই দীপোৎসবকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নতুন নতুন রেকর্ডের উদ্যোগও নেওয়া হয়। এ বার এই দীপোৎসবের কেন্দ্রবিন্দু অযোধ্যার রাম মন্দির। কারণ, এ বছর জানুয়ারিতে উদ্বোধন করা হয় রামমন্দিরের। সেই দিক থেকে এ বছরই প্রথম দীপাবলি। প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বার সরযূ নদীর তীরে ২৮ লক্ষ প্রদীপ জ্বালানো হবে। আর এই দীপোৎসবের মধ্যে দিয়েই নতুন রেকর্ডের প্রস্তুতিও তুঙ্গে অযোধ্যায়। এই দীপোৎসবের জন্য বিশেষ প্রকৃতিবান্ধব দীপ আনানো হয়েছে। রাম মন্দির সেজে উঠবে সেই প্রকৃতিবান্ধব দীপে। যাতে মন্দিরের কোনও রকম ক্ষতি না হয়, সে কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন এক প্রশাসনিক আধিকারিক।